ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়
ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়

ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়

বর্তমান সময়ের পৃথিবী আধুনিক হচ্ছে। এবং মানুষ বিজ্ঞানমুখী হচ্ছে। বিভিন্ন উপায়ে মানুষ আয় করে থাকে। যেমন কেউ ব্যবসা করে, কেউ চাকরি করে আয় করেন। এছাড়াও অনেক উপায় রয়েছে আয় করার। এর মধ্যে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ইন্টারনেট থেকে আয় করা। বর্তমান সময় লাখ লাখ মানুষ ইন্টারনেট থেকে আয় করে থাকে। কিন্তু সামান্য কয়েক বছর আগে এটি শুধুমাত্র মানুষের স্বপ্ন ছিল। এবং ইন্টারনেট থেকে আয়ের এর এত উপায়ও ছিল না।

ইন্টারনেট থেকে আয় করার দুইটি পদ্ধতি আছে-

১। চাকরি

অন্যের প্রতিষ্ঠানে চুক্তি ভিত্তি বা মাসিক ভিত্তিতে অনলাইনে কাজ করা।মাস শেষে আপনি একটি নিদৃষ্ট অংকের টাকা পাবে। এটা মূলত আপনার দক্ষতার উপর নির্ভর করবে আপনি কত বেতনের চাকরি পাবেন? দক্ষতার উপর ভিত্তি করে এই অর্থ- $100 – $5000 ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

২। ব্যবসা

ব্যবসা বলতে বোঝায় স্বাধীন একটি পেশা যেখানে আপনি আপনার মত করে কাজ করতে পারবেন।অনলাইনে ব্যবসার হাজার রকম উপায় আছে। যে সব ব্যবসায় বা স্বাধীন পেশায় আপনার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। হ্যাঁ, এমনই একটি অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট (Website) তৈরি। যদি আপনার লেখা লেখি করার অভ্যাস থাকে যে কোন বিষয়ে তাহলে আপনি একটি ওয়েবসাইট করে মাসে $ 500 – $10,000 ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।

আজকে আপনাদের মাঝে আমি এরকম একটি আয়ের উপায় নিয়ে আলোচনা করব। এটি হচ্ছে ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়।

আমরা জানব ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়।

ওয়েবসাইট বানিয়ে টাকা আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে যেমন ই-কমার্স, ব্লগ নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি।  আপনি চাইলে বাংলা ওয়েবসাইট বানিয়ে ও টাকা আয় করতে পারবেন। যেমন ধরুন নিউজ পোর্টাল থেকে।

 আসুন জেনে নেই ওয়েবসাইট তৈরীর পদ্ধতি ওয়েব সাইট থেকে কি কি উপায়ে আয় করা যায় এসকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।

কোন ধরনের ওয়েবসাইট খুলবেন

মূলত ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য ব্লগ সাইট তৈরি করে থাকে বেশিরভাগ মানুষ। এছাড়াও রয়েছে প্রশ্ন উত্তর সাইট, ফোরাম সাইট ইত্যাদি। এর পাশাপাশি অনেকে ডাউনলোড সাইট তৈরি করে থাকে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট যুক্ত করা হয় ডাউনলোড এর জন্য। তবে বর্তমান সময়ে ব্লগ সবচাইতে জনপ্রিয় এবং ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পাওয়া যায়।ব্লগিং সারা বিশ্বে প্রচুর পরিমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন হাজার হাজার ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে।

কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়

ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নির্দিষ্ট নাম ঠিক করতে হবে। এবং যে নামে আপনি ওয়েবসাইটটিকে সকলের নিকট পরিচিত করে তুলবেন। এটিকে বলা হয় ডোমেইন। আপনারা যে এই ওয়েব সাইটটিতে এই আর্টিকেলটি পড়তেছেন এই ওয়েব সাইটেরও একটি নাম ও ঠিকানা রয়েছে। এবং ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে এই নাম ঠিকানাকে ডোমেইন বলা হয়। যেমন- Grand Learning School । একটি ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য ডোমেইন এর পাশাপাশি হোষ্টিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এর জন্য কোন ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রথমে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করার পরে আপনাকে একটি সাইট তৈরি করতে হবে। কি রকম সাইট হবে তা নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের সাইট তৈরি করছেন তার উপর। এর জন্য আপনি একজন ওয়েব ডেভলপারকে হায়ার করতে পারেন। আপনার চাহিদা অনুযায়ী তাকে দিয়ে আপনার পছন্দ মত ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন। এছাড়া চাইলে আপনি রেডি ওয়েব সাইটস কিনে নিতে পারেন। অথবা ওয়েব সাইট এর জন্য একটি থিম কিনে আপনার সাইটটি তৈরি করে নিতে পারেন। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি হয়ে যাবে। এবং এখানে আপনি যে সকল কনটেন্ট যুক্ত করতে চান তা যুক্ত করতে পারবেন।

কিভাবে কন্টেন্ট তৈরি করব ও কিভাবে ভিজিটর আনব

একটি ওয়েবসাইটে প্রাণ হচ্ছে ভিজিটর।অনলাইনের ভাষায় যাকে ট্রাফিক(traffic) বলে। তাই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে এর ভিজিটর (visitor) বা ট্রাফিক(traffic) বৃদ্ধির জন্য প্রচুর পরিমাণে কাজ করতে হয়। তবে ভিজিটর পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ব্লগ বা ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে কনটেন্ট বা লেখা যুক্ত করতে হবে। কারণ কন্টেন্ট ছাড়া আপনার ওয়েবসাইটে শুধু শুধু কোন ভিজিটর আসবে না। এবং আপনি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট যুক্ত করলেও যে আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর চলে আসবে তা কিন্তু নয়। এর জন্য মানসম্মত কন্টেন্ট প্রকাশ করার সাথে সাথে আপনাকে ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO-Search Engine Optimization) করতে হবে। এর ফলে Google সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে(searche engine) আপনার সাইটটি ভাল স্থান দখল করে নেবে। এবং মানুষ সার্চ করলে যদি সে বিষয়ে আপনার সাইটে কোন কনটেন্ট থাকে তা Google তার সামনে উপস্থাপন করবে এবং এভাবে আপনার সাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে।

ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায়

ওয়েবসাইট থেকে আয় করার উপায় বিভিন্ন উপায় থাকলেও প্রধানত ৩ টি উপায় এর উপর ভিত্তি করা হয়ে থাকে।

1. গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়( google adsense earning )

2. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় ( make money online affiliate programs )

3. স্পন্সরশীপ থেকে আয় ( Earn from sponsorship )

গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়( google adsense earning ) :

কিন্তু আপনি গুগল এডসেন্স নিয়ে কাজ করতে চাইলে আপনাকে কোন বাঁধাধরা বিষয়ের উপর কাজ করতে হবে না। আপনি যেকোন ধরনের বিষয় নিয়েই কাজ করতে পারবেন।যেমন শিক্ষা,স্বাস্থ, ফ্রিল্যান্সিং, টিপস এন্ড টিউটোরিয়াল ইত্যাদি। তবে এর জন্য আপনাকে সামান্য কিছু নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হবে। যেগুলো হলো আপনি কখনোই এডাল্ট কনটেন্ট পোস্ট করতে পারবেন না। কোন হ্যাকিং টুলস বা অনৈতিক কিছুই আপনার সাইটে শেয়ার করবেন না।

যদি আপনি এগুলো করে থাকেন তাহলে কখনোই গুগল এডসেন্স পাবেন না। আপনার সাইটে যদি মানসম্মত 15 থেকে 20 টি কনটেন্ট থাকে এবং মোটামুটি এসইও করা থাকে। এবং প্রাইভেসি পলিসি, contact-us, এবাউট আস ইত্যাদি’ পেজে অবশ্যই রাখতে হবে। তা না হলে কখনোই আপনি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ করাতে পারবেন না। এগুলো সঠিকভাবে করা হলে খুব সহজেই আপনি গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ করাতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স থেকে আয় বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য- গুগল এডসেন্স মূলত একজন পাবলিশার কে টাকা দিয়ে থাকে তার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে। বিভিন্ন কোম্পানির নিকট থেকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে এবং তা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে গুগল এডসেন্স। আপনার সাইটে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করা হলে গুগোল আপনার সাইটের বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে। তবে গুগল এডসেন্স কখন বিজ্ঞাপন ভিউ এর উপর কোন টাকা দেয় না। গুগল এডসেন্স শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনে ক্লিক এর উপর টাকা প্রদান করে থাকেন। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে যতই অ্যাডভিউ হোক যদি ক্লিক না আসে তাহলে আপনি আয় করতে পারবেন না। কিন্তু আপনার সাইটে যদি পর্যাপ্ত পরিমানে ভিজিটর থাকে এবং ভালো মানের কনটেন্ট থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার সাইট থেকে প্রচুর পরিমাণে আয় করা সম্ভব। Google প্রতি ক্লিকে 5 সেন্ট থেকে 10 ডলার পর্যন্ত দিয়ে থাকে। এবং আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে 100 ডলার হলে আপনি ব্যাংক অথবা চেকের মাধ্যমে সে টাকা তুলে আনতে পারবেন। গুগোল সরাসরি আপনার ঠিকানায় টাকা পাঠিয়ে দেবে।আপনার সাইটে যদি ডেইলি মাত্র ১০০০ ভিজিটর থাকে তাহলে প্রতিদিন ১-৫ ডলার আয় করা সম্ভব। এবং আপনি যদি একটি সাইট একবার জনপ্রিয় করে তুলতে পারেন তাহলে আজীবন এর থেকে আয় করা সম্ভব। মাসে $100-$5000 ডলার ইনকাম করতে পারবেন যদি আপনি নিয়মিত SEO(Search Engine Optimization) friendly আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন।

2. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় ( make money online affiliate programs )

বর্তমানে অনলাইন ইনকামের অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপায় হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং ( affiliate marketing) .আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে এবং সেটা যদি বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে রিভিউ লিখে থাকেন। তবে আপনি সে সব লেখার মধ্যে বিভিন্ন এফিলিয়েট লিংক বসিয়ে দিবেন।যাতে করে পাঠকরা তাদের পণ্য সহজেই পেতে পারে। কাস্টমাররা বিভিন্ন পণ্য কিনবে আপনার ঐ লিংক থেকে তারপর আপনি একটি কমিশন পাবেন। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটি নিদৃষ্ট টপিকের উপর ভিত্তি করে ওয়েবসাইট চালাতে হবে। একটা স্পেশাল টপিক ঠিক করে তবেই সেই টপিকে নিয়মিত লেখা লেখি করতে হবে।

একটি মোটামুটি মানের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে $ 20,000 ডলার পর্যন্ত ইনকাম করে থাকে।

3. স্পন্সরশীপ থেকে আয় ( Earn from sponsorship )

আপনার ব্লগ সাইটের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে স্পন্সরশীপ দিবে । ধরুন ,আপনার একটি টেকনোলজি বিষয় ওয়েবসাইট বা ব্লগ আছে ,তো সেখানে আপনি বিভিন্ন প্রযুক্তিগত পণ্য সম্পর্কে লেখালেখি করে ।এ রকম হলে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের নিত্য নতুন পণ্য নিয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে,তারা তাদের পণ্য সম্পর্কে আপনাকে লিখতে বলবে এবং আপনি সেই পণ্য সম্পর্কে লিখে আপনার ব্লগ সাইটে প্রচার করবেন তবে তারা আপনাকে প্রতিটি লেখার জন্য $50-$500 ডলার পর্যন্ত প্রদান করে থাকবে ।

একটি ওয়েব সাইট শুধুমাত্র যে আয়ের জন্য তৈরি করবেন তা কিন্তু নয়।বরং আপনি একটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে নিজেকে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারবেন।এবং আপনি যদি ভালো লেখালেখি করতে পারেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট আপনাকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরবে।