আর্টিকেল লিখে মাসে আয় ২০-৫০ হাজার টাকা- কীভাবে ব্লগ লিখে টাকা উপার্জন করা সম্ভব?

আর্টিকেল লিখে ব্লগ থেকে কিভাবে আয়

কীভাবে ব্লগ লিখে টাকা উপার্জন করা সম্ভব?

অনলাইনে আয় করার নিশ্চিত উপায় হিসেবে ব্লগিং-কে প্রাধান্য দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে আর্টিকেল লিখে ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়। তবে টাকা আয় করার পদ্ধতি হিসেবে ব্লগিং করতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মেনে কাজ করা উচিত। কারন কোন ক্ষেত্রেই পরিশ্রম ব্যাতিত অর্থ উপার্জন করা সম্ভব নয়। এ কারনেই আমাদের সকলেরই টাকা আয় করার চিন্তার পূর্বে সঠিক কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা উচিত। টাকা আয় করার পদ্ধতি হিসেবে আপনি যে পথই বেছে নিন না কেন পরিশ্রম করতেই হবে। না হলে সফলতার মুখ দেখা দুষ্কর হয়ে যায়। আর এ কারনেই আমাদের আজকের এই ব্লগিং টিউটোরিয়াল।আর্টিকেলটিতে বর্ননা করা হয়েছে কিভাবে সফল ব্লগার হবেন এবং একটি ব্লগ তৈরি করবেন। কিভাবে ব্লগ থেকে আয় করবো এবং ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ সম্পর্কে। তবে সবার আগেই বলে নেই ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আর্টিকেলটির প্রতিটি অংশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ কারনে সম্পুর্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন!

Read Also: ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন

আমরা এই আর্টিকেল হতে যেসকল বিষয় জানবো-


১: ব্লগার এবং ব্লগিং মানে কি এবং কিভাবে ব্লগার হওয়া যায়।
২: কিভাবে একটি ফ্রী ব্লগ তৈরী করব ও ইনকাম করব
৩: ব্লগে পোস্ট করার কিছু নিয়ম কানুন
৪: ব্লগে ভিজিটর বা ট্রাফিক বৃদ্ধি করার উপায়।
৫: ব্লগ থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়।

১: ব্লগার এবং ব্লগিং মানে কি এবং কিভাবে ব্লগার হওয়া যায়


আমরা অনেকেই শুনেছি ব্লগিং করে টাকা আয় করা সম্ভব। এ কারনেই আমাদের মাঝে ব্লগিং করার ইচ্ছে তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অনেকেই ব্লগ তৈরি করি। কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে আমাদের এই ইচ্ছে আর পূরন হয় না অনেকেরই। সঠিক ধারনা অর্জন করা এবং কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা এ কারনেই গুরুত্বপূর্ণ। ব্লগ হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। যেখানে মানুষ তাদের অভিজ্ঞতা অনুসারে লেখা লেখি করে থাকেন। যেগুলো মানুষের জানা দরকারী এবং জানার আগ্রহ ও রয়েছে। আপনি যদি এসকল বিষয়ে লেখালেখি করেন তাহলে আপনার ব্লগে মানুষ এসে লেখা গুলো পড়বে।

এই লেখালেখি করার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ব্লগ তৈরি করতে হবে। যেখানে আপনি আপনার জানা বিষয় গুলো লিখবেন। অনেকেই নিশ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চিন্তার সম্মুখীন হয়। কিন্তু আমি বলবো আপনি যে বিষয়টি ভালো জানেন এবং বোঝেন সেটিই আপনার নিশ হওয়া উচিত। যেমন ধরুন আপনি খেলাধুলা সম্পর্কে ভালো বোঝেন তাহলে আপনার নিশ খেলা ধুলা হওয়াই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে আপনি লেখালেখি করবেন তাই আপনি হলেন ব্লগার। এবং আপনার কাজটিকে বলা হয় ব্লগিং। যেখানে লিখবেন সেটি আপনার ব্লগ।

ব্লগ সাধারণ দুইটি ভাবে তৈরি করা সম্ভব।
★ ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা। এখানে আপনার প্রতি বছর ডোমেইন এক্সটেনশন এবং হোস্টিং এর জন্য নির্দিষ্ট হারে অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে এখানে সুবিধা অনেক বেশি পাবেন। এবং কোন বাধা নিষেধ এবং সীমাবদ্ধতা নেই এখানে।

★ ফ্রি প্লাটফর্মে সব কিছু সম্পুর্ন ফ্রিতেই ব্যাবহার করতে পারবেন। ফ্রিতে ব্লগিং করার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকলেও এখানে আপনাকে কোন রূপ খরচ করতে হবে না। এ কারণে যারা খরচ করতে রাজি নয় তাদের জন্য ফ্রি ব্লগিং সব চাইতে সহজ মাধ্যম হতে পারে। ফ্রিতে ব্লগ খোলার ক্ষেত্রে আপনাকে কোন ডোমেইন হোস্টিং ক্রয় করতে হবে না। বর্তমান সময়ে অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে যারা ফ্রিতেই ব্লগিং করার সুযোগ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্লগিং করার সুযোগ দিলেও আমি আপনাদের পরামর্শ দিব ব্লগার ( blogger.com ) ব্যবহার করার জন্য। ব্লগার হলো গুগলের একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে প্রফেশনাল মানের ব্লগ তৈরী করতে পারবেন। অন্যান্য ফ্রী ব্লগ এর ক্ষেত্রে আয় এর সীমাবদ্ধতা থাকলেও আপনি ব্লগারের ব্লগ করে সকল উপায়ে আয় করতে পারবেন।

এখানে আপনার কোন রূপ হোস্টিং বা ডোমেইন চার্জ দিতে হবে না। এবং ডোমেইন হিসেবে ব্লগস্পট এর সাব ডোমেইন পাবেন। আপনার ব্লগ সাইটের ওয়েব এড্রেসটি হবে example.blogspot.com তবে আপনি চাইলে এখানে কাস্টম টপ লেভেল ডোমেইন যুক্ত করতে পারবেন। যদি আপনি এখানে কাস্টম টপ লেভেল ডোমেইন যুক্ত করেন তাহলে আপনার ব্লগটি একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট হবে।

কিন্তু এক্ষেত্রে আমি আপনাদের পরামর্শ দিব অবশ্যই সামান্য কিছু টাকা ব্যয় করে প্রথমেই একটি টপ লেভেল ডোমেইন কিনে নেবেন। এছাড়া বিভিন্ন ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার প্রথম বছর খুব কম মূল্যে ডোমেইন প্রভাইড করে থাকে।৩০০-৬০০ টাকার মধ্যে ডোমেইন পেয়ে যাবেন । এবং ডোমেইন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডটকম (.com) ডোমেইন নির্বাচন করবেন। এর জন্য ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের (Search Engine optimization – SEO ) ক্ষেত্রে টপ লেভেল কাস্টম ডোমেইন বিশেষ পজিটিভ ভূমিকা রাখবে।এবং গুগলে দ্রুত র‌্যাংক করবে আপনার ব্লগ।

একটি ফ্রী ব্লগ খুলতে প্রথমে এই blogger.com অ্যাড্রেসে যান। এবং আপনার জিমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে সাইন ইন করে নিন। তাহলে একটি ব্লগ তৈরী ফরম পাবেন সেখানে আপনার ব্লগের শিরোনাম ওয়েব এড্রেস দিন ( তবে আপনি যে ওয়েব এড্রেসটি দিতে চান সেটি যদি এভেলেবেল না থাকে তাহলে আপনি সেই এড্রেস দিয়ে নতুন ব্লগ তৈরী করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে আপনার অ্যাড্রেসটা কিছুটা পরিবর্তন করুন এবং যখন এড্রেসে ডান পাশে টিক চিহ্ন উঠবে তখন বুঝবেন আপনি এই অ্যাড্রেস দ্বারা ব্লগ তৈরী করতে পারবেন ) এবং থীম সিলেক্ট করে ক্রিয়েট অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে ব্লগ তৈরির কাজ সম্পন্ন করুন। তাহলেই আপনার ব্লগ তৈরি হয়ে যাবে। এবার তাইলে আপনি আপনার পছন্দসই কাস্টম থীম আপলোড করার মাধ্যমে ব্লগের কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। অথবা থিম অপশনে দেওয়া ডিফল্ট থিম গুলো ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল আপনার ফ্রি ব্লগ।

৩: ব্লগে পোস্ট করার কিছু নিয়ম কানুন –

ব্লগ তৈরি যখন করে ফেলেছেন তাহলে কিভাবে পোস্ট করতে হয় সেটাও বুঝে গিয়েছেন। তবে পোস্ট করতে শিখে গেলেও পোস্ট করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। যেমন অন্য কোন সাইট থেকে কপি করে পোস্ট দেওয়া যাবে না। এছাড়াও ব্লগের ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল রাইটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা আপনার আর্টিকেল এর মানে যতই ভালো হোক না কেন যদি সেটি এসইও ফ্রেন্ডলি না হয় তাহলে তা ভিজিটরের নিকট পৌছাবেনা এবং আপনার ব্লগের ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে না। আর একারণেই কোয়ালিটি কনটেন্ট এর সাথে সাথে এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লেখার চেষ্টা করতে হবে। এজন্য যেসকল কাজ করতে হবে তা হল,

★ আর্টিকেলের জন্য কিওয়ার্ড নির্বাচন- আমরা যে আর্টিকেল লিখে থাকি সেগুলো খোঁজার জন্য মানুষ যে সকল শব্দ বা সেন্টেন্স ব্যবহার করে এগুলোই হল কীওয়ার্ড। তবে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ভাবে সার্চ করে থাকে। কিন্তু কীওয়ার্ড বলা হয় যে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি বার বিষয়টি খোজার জন্য সেগুলোকে।

এ কারণে যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখবেন তার উপর কিওয়ার্ড গুলো খোজ করুন। এবং একটি প্রধান কিওয়ার্ড হিসেবে নির্বাচন করার সাথে সাথে আরও কিছু নিন আর্টিকেল লেখার জন্য। কিওয়ার্ড টির সার্চ ভলিউম এবং কম্পেটিটর দেখে নিন। তবে আমার ব্যাক্তিগত মতামত থেকে বলতে চাই এখানে সার্চ ভলিউম দেখুন এবং কম্পিটিশন কতটা তা না দেখলেও চলে। শুধুমাত্র কিওয়ার্ডটি সার্চ করে দেখুন। কারা ব্যাবহার করেছে। যদি কোন নামি দামি সাইট না হয়। অর্থাৎ যাদের অথোরিটি কম তারা যদি সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্ত মনে কিওয়ার্ডটি ব্যাবহার করতে পারেন। এবং হাই অথোরিটির সাইট থাকলে পোস্টটি দেখুন যদি কোয়ালিটি কম মনে করে থাকেন তাহলে আপনি কাজ শুরু করুন। কারন তারা কোয়ালিটিতে নয় অথোরিটির কারনে র‌্যাংক করেছে। আর আপনি কোয়ালিটি মেইন্টেন করতে পারলে অবশ্যই র‌্যাংক করতে পারবেন। কারন অথোরিটির থেকে কোয়ালিটির দাম অবশ্যই বেশি হবেই।

এবার মেইন কিওয়ার্ড আপনার আর্টিকেলের টাইটেলে ব্যবহার করুন। টাইটেল লেখার ক্ষেত্রে 36 অক্ষরের বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। এবং মেইন কিওয়ার্ড কয়েক বার আর্টিকেলটির ভিতরে ব্যবহার করবেন। এর পাশাপাশি যে অতিরিক্ত কিওয়ার্ড গুলো নিয়েছিলেন সেগুলো ব্যবহার করুন। তবে এক্ষেত্রে একসাথে অনেক গুলো কি করে নিলে কোন সুফল পাবেন না।৫-৬ টি অতিরিক্ত পোস্ট রিলেটেড কিওয়ার্ড নিন। তবে বারবার কিওয়ার্ড ব্যবহারের ফলে আর্টিকেলটির সৌন্দর্য নষ্ট করা চলবে না। এমন ভাবে কিওয়ার্ড গুলো অপটিমাইজেশন করতে হবে যেন পোস্ট থেকে আলাদা মনে না হয় বিষয়টি।

★ ইমেজ অপটিমিজেশন- একটি ছবি একটি পোষ্টের সৌন্দর্য বহুগুণ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও একটি ছবির মাধ্যমে খুব সহজেই পাঠক সম্পূর্ন পোস্ট না পড়েই এর সম্পর্কে একটি ধারণা অর্জন করেন। এ কারণেই ব্লগ পোষ্টের সাথে কমপক্ষে একটি ইমেজ অবশ্যই ব্যবহার করবেন। তবে বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত একটি ছবির বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। অতিরিক্ত ব্যবহার করার ফলে আপনার ব্লগের লোডিং টাইম বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও ইমেজ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কপিরাইট ইমেজ ব্যবহার করা যাবে না। এবং এটি অপটিমাইজ করে দেওয়া দরকার। ছবিটি অপ্টিমাইজ করার ক্ষেত্রে সাইজ 100kb এর বেশি না রাখাই ভালো। এবং ছবিটি আপলোড করার পূর্বে অবশ্যই রিনেম করে কোন  কিওয়ার্ড দিয়ে নাম দিবেন। এবং ব্লগে আপলোড করার পরে ছবিটির উপর ক্লিক করলে properties নামক একটি অপশন পাবেন। সেখানে নিচে ছবিটির নাম ( অর্থাৎ যে কিওয়ার্ড ব্যাবহার করেছিলেন)  উপরের ঘরে ছবিটি সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত লিখে দিবেন। তাহলেই ইমেজটি একশত ভাগ অপটিমাইজ হয়ে যাবে।

★ সার্চ ডেসক্রিপশন সেট করা – সার্চ ডেস্ক্রিপশন অপশনটি আপনি পোস্ট লেখার জায়গার ডান পাশে পাবেন। এটি হলো গুগলে সার্চ করার পরে পোষ্টের কিছু অংশ দেখা যায় সেটি। এ কারনে পোষ্টের আকর্ষণীয় অংশ টুকু এবং কিওয়ার্ড ডেনসিটি যেখানে বেশি সেটি ব্যাবহার করবেন। আর্টিকেলের ভিতরে নাই এমন কোন ওয়ার্ড ব্যাবহার করা যাবে না। এবং ডেসক্রিপশন অবশ্যই ২০০ লেটারের মধ্যে দিবেন। কারন বেশি লেটারের দিলে আপনি যে অংশ দেখাতে চাচ্ছেন তা ঠিক মত দেখাবে না গুগল সার্চ রেজাল্টে।

★ পার্মালিংক (Permalink) এডিট করে দেওয়া – লিংক হলো একটি পোস্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ কারনেই লিংক অপটিমাইজেশন করাও গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনার লিংকটি আপনার পোস্টের টাইটেলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তখন একজন ভিজিটর যেমন লিংক দেখেই পোস্টের বিষয় শনাক্ত করতে পারে তেমনই গুগলও। পোস্টের লিংককে প্রচুর পরিমাণ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। যেমন আমরা  দেখি কিছু কিছু ওয়েব সাইটের লিংক অনেক বড় এবং হাবিজাবি লেখা। যার মাধ্যমে কিছু মাথামুণ্ডু বোঝার উপায় নেই। আবার বর্তামানে দেখা যায় লিংক গুলোতে সাইটের ডোমেইন নেম এর পরে পোস্টের টাইটেল থাকে।  গুগল এ ধরনের লিংককে বেশি গুরুত্ব দেয়। এবং লিংকের ভিতর স্ল্যাশ (/)  কম থাকবে পোস্টটি ততই র‌্যাংক করার জন্য প্রস্তুত হবে। তবে ব্লগারে ইংরেজি টাইটেল এর জন্য Permalink এডিট না করলেও হয় কারন তখন টাইটেল অটোমেটিক লিংকে যুক্ত হয়। কিন্তু বাংলা আর্টিকেলের ক্ষেত্রে এডিট করে বাংলিশ করে টাইটেল দিতে পারেন এবং স্পেস এর জন্য (-) এই চিন্হ ব্যাবহার করতে হবে।

★ ট্যাগ সেট করা – ট্যাগ সেট করার মাধ্যমে পোস্টটি কোন  ক্যাটগরির সেটা দেখা সেট করতে হয়। এবং প্রতিটি ট্যাগ কমা (,) দ্বারা পৃথক করতে হবে। ২০০ লেটারের বেশি ট্যাগ দেওয়া যায় না ব্লগারে।

ব্যাস আর্টিকেলটি ১০০% অপটিমাইজেশন করা সম্পন্ন হয়েছে। এবং এখন শুধু পাবলিশ করার পালা। পাবলিক করলেই আপনার লেখা সমগ্র বিশ্বব্যাপি উন্মুক্ত হয়ে গেল সকল পাঠকের জন্য।

৪: ব্লগে ভিজিটর বা ট্রাফিক বৃদ্ধি করার উপায়

ব্লগের ভিজিটর বা ট্রাফিক হলো প্রান। প্রান ছাড়া প্রানীর যেমন কোন মূল্য নেই ঠিক তেমনি ভিজিটর  ছাড়া ব্লগও মূল্যহীন। এ কারনেই সকলে তাদের ওয়েব সাইট বা ব্লগের ভিজিটর বৃদ্ধি করার জন্য সর্বদা তৎপর। কিন্তু ভিজিটর তো সীমাবদ্ধ। অন্য সাইটের ভিজিটরকেই আপনার সাইটে নিয়ে আসতে হবে তাই। আর এর  ফলে তৈরি হয়েছে প্রতিযোগিতা। ফলে ভিজিটর বৃদ্ধি করা এখন সময়ে দাবি হয়ে দাড়িয়েছে। এ কারনে এখন আর সাইট তৈরি করলেই এখন আর সহজে ভিজিটর পাওয়া সম্ভব হয় না।

তবে সঠিক নিয়ম ফলো করলে আপনার ব্লগের ভিজিটর খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এটি হলো seo বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এটি আমাদের সাইটকে সার্চ ইঞ্জিন গুলোর কাছে উপস্থাপন করা। যে যত ভাল উপস্থাপন করতে পারবেন সে ততই লাভবান হবে। এসইও ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে ব্লগে ট্রাফিক সংগ্রহ তরা সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম হলো সোস্যাল মিডিয়া।  এটির মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ ট্রাফিক জেনারেট করা সম্ভব।  কারন বর্তমান সময় মানুষ সবচাইতে বেশি সময় এক্টিভ থাকেন এখানে। সোস্যাল মিডিয়ার নাম বললে প্রথমেই চলে আসে ফেসবুকের কথা। এর বাইরেও আরো অনেক সোস্যাল মিডিয়া রয়েছে যেমন, Linkedin, reedit, medium ইত্যাদি।  তবে এই ট্রাফিক বা ভিজিটর স্রোতকে বজায় রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই সার্চ ইঞ্জিনের সহায়তা নিতে হবে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করার ক্ষেত্রে ব্যাকলিংক তৈরি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।  কারন গুগল সকল সময় একটি সাইটকে ব্যাংলিকের মাধ্যমে র‌্যাংক প্রদান করে। এবং এর ফলে সাইটের অথোরিটি বৃদ্ধি পায়। ব্যাকলিংক তৈরির সবচাইতে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো গেষ্ট পোস্ট সাবমিট, ফোরাম, ব্লগ কমেন্ট,  বিভিন্ন সাইটে প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে প্রোফাইল ব্যাকলিংক, ডিরেক্টরি সাবমিট এবং সোস্যাল বুকমার্ক। এবং এগুলোই হলো অফ পেইজ এসইও। তবে ব্যাকলিংক তৈরির জন্য কোয়ালিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হলো আপনি যে সাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করবেন তার অথোরিটি চেক করে নেওয়া।  তবে ফোরাম ব্যাকলিংক করার ক্ষেত্রে কখনোই সরাসরি সাইটের লিংক দিয়ে না করে বিভিন্ন পোস্টের লিংক শেয়ার করতে হবে।

এর ফলে একদিকে ওইসকল সাইট থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর আসবে। একই ভাবে ব্লগের র্যাংক ও বৃদ্ধি পাবে। কারন গুগল একটি সাইটকে তার পেইজ র্যাংক দিয়ে থাকে সাইটটি কতগুলো সাইটের সাথে সম্পর্ক যুক্ত তার উপর ভিত্তি করে। এর ফলে ব্লগের পোস্ট গুলো দ্রুত সার্চ রেজাল্টের প্রথম পাতায় চলে আসবে।

৫: ব্লগ থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়

একটি ব্লগ তৈরি এবং তার উপর শ্রম ও অর্থ ব্যয়ের  প্রধান উদ্দেশ্য হলো আয় করা।আমাদের মাঝে এখনও বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে এ সম্পর্কে। অনেকেই মনে করি ভিজিটর আসলেই আয় হয়। একারনে অনেককে প্রশ্ন করতে দেখেছি ব্লগে কত ভিজিটরে কত টাকা দেয়।ভিউ হওয়ার সাথে আয়ের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও প্রতি ১০০০ ভিজিটর দ্বারা আপনি ১ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। এবং ভিজিটর ভেদে এ আয় আরো বেশি হতে পারে । ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায় আয় করা সম্ভব হলেও প্রধান উপায় হচ্ছে গুগল এডসেন্স (Google Adsense)  এটি গুগলের নিজস্ব এডস নেটওয়ার্ক।  এবং বর্তমান সময়ে আরো অনেক এড নেটওয়ার্ক থাকলে-ও রেভিনিউ শেয়ারে গুগল এডসেন্স সবার শীর্ষে।

গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করার জন্য কিছুটা কষ্ট করতে হয়। কারন সাইটটি গুগল টার্মস এন্ড কন্ডিশন অনুযায়ী না হলে কখনোই এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়া সম্ভব নয়।  এর জন্য আপনাকে কতগুলো নিয়ম কানুন অনুসরণ করতে হবে।  যেমন, কোন প্রকার এডাল্ট কন্টেন্ট শেয়ার করা যাবে না, হ্যাকিং বা কোন সফটওয়্যারের ক্রাক বা কিছু শেয়ার করলে এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়া সম্ভব নয়।  এছাড়াও ব্লগে কয়েকটি পেইজ তৈরি করতে হবে।  এগুলো হলো – Privacy Policy, About Us, Contact Us এবং এই পেইজ গুলো অবশ্যই ইংরেজিতে তৈরি করতে হবে। আপনার সাইটটি বাংলা হলেও পেজগুলোতে ইংরেজি ভাষার ব্যাবহার করতে হবে। সাইট গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট করতে হবে।

এসকল শর্ত পূরন করা হলেই আপনি এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।  আবেদনের ২-৭ দিনের মধ্যেই তারা আপনার আবেদনটি পর্যালোচনা করার মাধ্যমে এডসেন্স এপ্রুভ করে দিবে। এবং আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন পরিদর্শন শুরু করে দিবে।

তবে এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়া মানেই যে আপনি হাজার হাজার ডলার আয় করা শুরু করে দিবেন তা কিন্তু নয়। অবশ্যই আপনার এডসে ভিজিটরদের ক্লিক করতে হবে। তবে কখনোই নিজে ক্লিক করতে যাবেন না। তাহলে আপনার সকল স্বপ্নের ইতি ঘটতে বেশি দেরি লাগবে না। এবং প্রথমদিকে আয় একটু কম থাকলেও পরবর্তীতে আয় অনেক বৃদ্ধি পাবে। তাই হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই।  ধৈর্য সহকারে কাজ করুন সফলতা পাবেনই।

Read Also: অনলাইন থেকে আয় করার ৫টি উপায়