ফেসবুক একাউন্ট সুরক্ষিত রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস।ফেসবুক হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়
সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া হলো ফেসবুক (facebook)। লক্ষ লক্ষ মানুষ দৈনিক ফেসবুক(facebook) ব্যবহার করে থাকে।ফেসবুকের এই জনপ্রিয়তা একদিকে যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে।সেই সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রাহকদের নিরাপত্তার ঝুঁকি।Security and login বিষয়ে আজকের পরামর্শ। মাঝে মধ্যেই আমাদের অনেকেরই ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে যায়।কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে আমাদের ফেসবুক আইডি নিরাপদ থাকবে।যেসকল সতর্কতা অবলম্বন করলে আইডি সুরক্ষিত থাকবে তা আমাদের সকলেরই জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায় গুলো। এবং কিভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হতে পারে তা জানবো।
যে কারনে আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে যেতে পারে এবং ফেসবুক হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় কি
ফেসবুক আইডি হ্যাক করার জনপ্রিয় উপায় হলো ফিশিং। ফিশিং এর মাধ্যমে আমাদের ফেসবুক আইডির ইমেইল ও পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের হাতে চলে যেতে পারে।এসকল ফিশিং করার জন্য হ্যাকার বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে থাকে ভিক্টিমকে।যেমন আপনি লটারি জিতেছেন,বা বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন মূলক বার্তা তারা আপনাকে পাঠাতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত পরিচিত বা অপরিচিত কেউ যদি আপনাকে কোন লিংক প্রদান করে থাকে তাহলে সবার প্রথমে লিংকটি যাচাই করে এর পরেই প্রবেশ করতে হবে।
ফেসবুক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড অবশ্যই কঠিন দিতে হবে ।অক্ষর নম্বর এবং সিম্বল যুক্ত করে দিতে হবে । এর ফলে আপনার পাসওয়ার্ডটি অনেক সিকিউর হবে এবং কেউ সহজেই আপনার পাসওয়ার্ডটি ভাঙতে পারবেনা। এক্ষেত্রে বড় হাতের এবং ছোট হাতের মিলিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন এবং কখনোই নাম বা মোবাইল নম্বর পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। যদি নাম্বার মোবাইল নম্বর পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে খুব সহজেই যে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জেনে যেতে পারে। এবং আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অথবা অনলাইনের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড এর সাথে মিল রেখে কখনোই ফেসবুকের পাসওয়ার্ড দেবেন না। বরং প্রতিটি একাউন্ট এর ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। কেননা যদি আপনি সবগুলোতে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে যদি কোনভাবে আপনার একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যায় তাহলে একই সাথে আপনার সকল অ্যাকাউন্টগুলো হ্যাক হয়ে যাবে। এবং সেই সাথে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যেতে পারে।
বর্তমান সময়ে অনেক অ্যাপস বা সাইট রয়েছে যেগুলোতে ফেসবুকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যায়। এর মধ্যে অধিকাংশ সাইট নিরাপদ আবার অনেকগুলো সাইট বিপদজনক হতে পারে। কারণ ফেসবুকের মাধ্যমে লগইন করার ফলে আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য তারা দেখতে পারে। এবং আপনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা হাতিয়ে নিতে পারে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ইমেইল অথবা মোবাইল নম্বর দিয়ে অবশ্যই খুলেছিলেন। ইমেইল এড্রেস বা মোবাইল নম্বর আপনার এবাউট এ দেখা যায়। এটি অবশ্যই হাইড করে রাখতে হবে কারণ আপনার ফেসবুক একাউন্টে কোন নম্বর বা ইমেইল দ্বারা খোলা হয়েছে এগুলো কেউ জেনে গেলে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেক গুন বেড়ে যায়। ফেসবুক হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় হিসাবে যদি আপনার ফেসবুকে ইমেইল একাউন্ট বা ফোন নম্বর দেয়ার প্রয়োজন পড়ে এক্ষেত্রে আপনি অন্য ইমেইল একাউন্ট বা ফোন নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে কেউ চাইলেও আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন ইমেল বা ফোন নম্বর খুঁজে পাবেনা।
অপরিচিতদের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়
মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তাদের কাছ থেকে কার্যসিদ্ধি করার লক্ষ্যে স্ক্যামার বা সন্দেহজনক ব্যক্তি নকল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারে। এদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে তারা আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম পোস্ট করে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে।বিভিন্ন স্ক্যামার আপনাকে এবং আপনার পরিচিতজনদের বিদ্বেষপূর্ণ পোস্টে ট্যাগ করতে এবং মেসেজ পাঠাতে পারে। এ জন্য সতর্কতার সঙ্গে আপনার পরিচিত এবং বিশ্বস্ত মানুষদের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করেন। একইভাবে, আপনার পেজ ব্যবস্থাপনার জন্য এমন কোনো নিয়ম-নীতি রাখবেন না। কোন সন্দেহজনক কোন রিকুয়েস্ট আসলে রিপোর্ট করুন।
সহিংসতা এবং দেশদ্রোহীতা মূলক পোস্ট করা বা শেয়ার করা হতে বিরত থাকুন। কারণ আপনি যদি এ ধরনের পোস্ট করে থাকেন বা শেয়ার করে থাকেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি বিভিন্ন হ্যাকারের নজরে চলে আসবে। এবং তারা চাইবে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করতে। যার ফলে আপনি পড়ে যেতে পারেন বিভিন্ন জটিল সমস্যার মধ্যে।
অধিকাংশ সময় ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের ফানি সাইট পাওয়া যায়। যেগুলোর মাধ্যমে আপনার পূর্বজন্মের তথ্য ইত্যাদি দেখা যায়। বা অনেকগুলো দেখা যায় যে আপনি কোন সেলিব্রেটির মতো দেখতে ইত্যাদি।এগুলো দেখার জন্য বিভিন্ন লিঙ্ক প্রদান করা হয়। এসকল লিংকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রবেশ করা উচিত। এবং সবচাইতে ভালো হবে যদি আপনি এই সকল লিংক গুলো এড়িয়ে চলেন। কারণ এগুলোর মাধ্যমে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ফেসবুক একাউন্ট আরো সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে আপনি টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করতে পারেন। যদি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন এর ক্ষেত্রে two-factor অথেন্টিকেশন চালু করা হয় তাহলে প্রত্যেকবার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন এর সময় আপনার ফোন নম্বরে একটি ছয় সংখ্যার কোড যাবে। যার মাধ্যমে আপনাকে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করতে হবে।
এ সময় যদি কারো কাছে যদি আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড থেকেও থাকে তবুও সে আপনার ফেসবুক আইডিতে লগইন করতে পারবে না। কারণ যে নম্বরে আপনার টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (Two-factor Authentication)চালু করা সে নম্বরটি শুধুমাত্র আপনার কাছেই আছে। এবং কেউ যদি আপনার পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুক লগইন এর চেষ্টা করে তাহলে অটোমেটিক আপনার ফোনে লগইন এর কোড চলে আসবে। এর ফলে সে লগইন করতে চাইলেও পারবেনা বরংচ আপনি জেনে যাবেন কেউ আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করতে চাইছেন। এবং এটি যে কোনো ধরনের অনলাইন একাউন্ট এর জন্য সর্বোচ্চ মানের সিকিউরিটি সিস্টেম। বর্তমান সময়ের ফেসবুকসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার ক্ষেত্রে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি আপনার ফেসবুক একাউন্টে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করেন তাহলে আপনার ফেসবুক একাউন্টটি সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ থাকবে।
উপরোক্ত সকল নিয়মকানুন মেনে চললে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। এবং আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হ্যাকিং এর হাত থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে।