গরমে সুস্থ থাকার সর্বোত্তম ৮ টি উপায়

গরমে সুস্থ থাকার উপায় কী

গরমে সুস্থ থাকার উপায় কি? গরমে শরীর সুস্থ রাখার ৮ গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

শীত চলে গেল এর ভিতরেই চলে আসছে প্রচন্ড গরম। শীতে যেমন মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ঠিক একইভাবে গরমেও আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি হয়। বরংচ শীতের তুলনায় গরমের স্বাস্থ্য ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। তাই এই স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে চলার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।তবে এই গরমে সুস্থ থাকার উপায় কি?অথবা গরমে সুস্থ থাকতে যা খাবেন এসকল বিষয় জানতে হবে বা গরমে সুস্থ থাকার উপায় কিভাবে জানতে পারবো।তার সমাধান এইখানে নিয়ম মেনে না চললে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। এসকল অসুখ-বিসুখ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ  পারে।এছাড়াও প্রচণ্ড গরমে জ্বর সর্দি-কাশি এর মত অসুখ করার পাশাপাশি ডিহাইড্রেশন ছাড়াও হিটস্ট্রোক এর মত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এসকল বিষয় থেকে সুস্থ থাকতে কিছু পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে আসুন এ সকল বিষয় সম্পর্কে জেনে নি। গরমে সুস্থ থাকার উপায় কি? গরমে শরীর সুস্থ রাখার ৯ উপায় সম্পর্কে জেনে নেই –

প্রচন্ড রোদে বাইরে বের হতে হলে সচেতনতা অবলম্বন করুন-

 চৈত্র-বৈশাখ মাসে বাইরে কাঠ ফাটা রোদ। এর সাথেই অসহ্য প্রচন্ড গরম। অসহ্য গরমে মানুষ যখন অস্থির হয়ে যায়। তখন কর্ম ব্যস্ততার কারণে মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারে না। জীবিকার তাগিদে এবং অন্যান্য কারণে বাইরে যেতেই হয়। এ সময় প্রকৃতির প্রচণ্ড গরম আর কাঠফাটা রোদে মিলেমিশে এক অস্থির অবস্থা বিরাজ করে। এমন সময় বাইরে যেতে হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে। কারণ প্রচন্ড রোদ আমাদের শরীর এবং ত্বকের উপর সমস্যা করে থাকে। তাই বাইরে যেতে হলে ছাতা ব্যবহার করলে প্রখর রোদ আমাদের শরীরের ক্ষতি করতে পারবেনা। এর ফলে শরীর এবং ত্বককে সুস্থ থাকবে। অতিরিক্ত রোদে রয়েছে অনেক ক্ষতিকর রশ্মি যা আমাদের সরিলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।

খাদ্যতালিকায় শাকসবজি রাখুন-

 আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা রয়েছে। এ সকল পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে থাকে খাদ্যে।এর জন্য সুষম খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গরম কালে খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক সবজি রাখা জরুরি। এ সকল খাদ্য আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। তবে প্রচুর পরিমাণে মাছ মাংস খাওয়া যাবে না। মাছ মাংস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে কারণ মাছ বা মাংস এসকল আমিষ জাতীয় খাবার হজম করতে আমাদের শরীরের প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি খরচ হয়। তাই প্রচন্ড গরমের ভিতরে এসকল খাবার আমাদের শরীর ঠিক ভাবে নিতে পারে না। এ কারণেই এ সকল খাবারের পরিমাণ গরমকালে কমিয়ে দিতে হবে। এর বিপরীতে শাকসবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে তাহলে আমাদের শরীর সুস্থ এবং সতেজ থাকবে গরমকালে। এছাড়াও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার আমাদের শরীরকে স্থূলকায় করে তোলে। এবং বিভিন্ন ভয়াবহ রোগ সৃষ্টি করে যেমন ডায়াবেটিস। তবে একেবারেই বাদ দেওয়া যাবেনা পরিমিত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।

প্রচুর পরিমাণে রসালো ফল খান-

 চৈত্র-বৈশাখ মাস এ সময়কে বলা হয় মধুমাস। এ সময় প্রচুর পরিমাণে রসালো ফল মূল পাওয়া যায়। এবং এগুলো আমাদের দেশীয় ফল।তাই এসকল ফলগুলো সবস্থানে পাওয়া যায়। রসালো ফল মূল একদিকে যেমন ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস। তেমনি এসকল ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি। যা আমাদের শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করতে সহায়তা করে। গরমকালে আম, কাঁঠাল, তরমুজ, আনারস ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের রসালো ফল পাওয়া যায়।এগুলো একদিকে যেমন সুস্বাদু অপরদিকে সহজলভ্য।

বিভিন্ন ধরনের শরবত এবং ডাব খান-

অতিরিক্ত গরমে স্বস্তি পেতে হলে লেবুর শরবত ডাবের পানি এবং বেলের শরবত খেতে পারেন। এসকল পানিও একদিকে আমাদের গরমে স্বস্তি প্রদান করবে। ঠিক তেমনি এসকল শরবত ও ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। লেবু হচ্ছে ভিটামিন ‘সি’ এর উৎকৃষ্ট উৎস। তাই লেবুর শরবতে আমাদের একদিকে যেমন গরমে স্বস্তি দেয়। তেমনি আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে থাকে।এবং এগুলো প্রচুর পরিমাণ খেতে পারেন।এতে আপনার পানির চাহিদা দুর হবে।এটি অতিরিক্ত পানি পান করার একটি সুন্দর বিকল্প উপায় হতে পারে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন-

পানির অপর নাম জীবন। পানি পান করা শীত কাল বা গরম কাল সকল সময় গুরুত্বপূর্ণ। পানি আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে। এবং পানি আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ প্রস্রাব ও ঘামের সাথে বের করে রক্তকে বিশুদ্ধ রাখে।এর পাশাপাশি শীতকালের তুলনায় গরম কালে প্রচুর পরিমাণে পানি বেশি পান করা দরকার ।কারণ গরম কালে আমাদের শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়।এছাড়া ডিহাইড্রেশন এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবং হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা ঘটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই এসকল সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। তবে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ অনেকেরই ফ্রিজের ঠান্ডা পানির কারণে জ্বর, সর্দির,কাশির মত সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই ফ্রিজের পানি পান করার ক্ষেত্রে যেন অতিরিক্ত ঠান্ডা না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। এবং প্রচন্ড রোদ থেকে এসেই ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। আগে শরীর ঠান্ডা করুন তারপরে পানি পান করুন তাহলে কোন সমস্যা সৃষ্টি হবে না। এছাড়াও বাইরে বের হলে এবং দীর্ঘ যাত্রার সময় ব্যাগে পানির বোতল রাখুন। এবং কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন।

পোশাক-পরিচ্ছদে পরিবর্তন আনুন-

গরমকালে এমনিতেই গরমে মানুষের প্রচন্ড খারাপ অবস্থা হয়। এমন অবস্থায় যদি পোশাকটি আরামপ্রদ না হয় তাহলে এ সমস্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। তাই গরমকালে আমাদের ঢিলেঢালা এবং পাতলা সুতির পোশাক পরিধান করা উচিত। তাহলে গরমের অস্বস্তি দূর হবে। এবং ফুরফুরে অনুভূতি জাগ্রত হবে। এছাড়াও বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। রোদে যাওয়ার সময় সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। কারণ চৈত্র বৈশাখ মাসের প্রচণ্ড রোদে রয়েছে ত্বক এবং চোখের জন্য ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি এবং ইউভি রশ্মি।

নিয়মিত দুইবার গোসল করুন

গরমের অস্বস্তি দূর করতে নিয়মিত দুই বেলা গোসল করুন।এর জন্য ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন।সকালে গোসল করুন।যার ফলে সারাদিন ফ্রেশ অনূভব হবে। এবং রাতে বাইরে বের হলে বাসায় ফিরে গোসল করা ফলে আপনি ফুরফুরে অনুভব করবেন এবং রাতের ঘুমও সুন্দর হবে।কারন বাইরের ধুলো বালি ময়লা গায়ে লাগলে অস্বস্তি ও চুলকানির মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।এবং এগুলো ঘুমের সমস্যা ঘটায় যার ফলে গোসল করার মাধ্যমে এসকল সমস্যা  দূর করা সম্ভব।

পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে –

গরমকাল শারিরীক সমস্যা যেমন ডায়রিয়া ও আমাশয় এবং বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন চুলকানি হতে পারে।তাই শারিরিক ভাবে সুস্থ থাকতে সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এবং পরিস্কার জামাকাপড় পরিধান করতে হবে। খাবার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে। এবং স্বাস্থকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।

উপরোক্ত এসকল টিপস গুলো মেনে চললে গরমের সুস্থ সবল থাকা সম্ভব।তাই আমাদের সকলের এসকল বিষয় মেনে চলতে হবে।আমাদের  শরিরের প্রতি যত্নশীল হলেই আমরা সুস্থ থাকতে পারবো।