plasma therapy in bangladesh বাংলাদেশে করোনায় প্লাজমা থেরাপি
বর্তমানে সারা পৃথিবীতে করোনা(corona) তার ভয়াল থাবা ছড়িয়ে দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে গোটা পৃথিবী। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো ও অসহায়। এখন পর্যন্ত করোনার তেমন কোনো ঔষধ আবিষ্কৃত হয়নি। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অবশেষে আশার আলো হয়ে এসেছে “প্লাজমা থেরাপি “।বাংলাদেশে করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি ও চালু হয়েছে।
⭕প্লাজমা থেরাপি কি?(what is plasma therapy)প্লাজমা মানে কি
রক্তের হলুদাভ তরল জলীয় অংশ হচ্ছে প্লাজমা। দেহে কোনো জীবানু প্রবেশ করার পর এন্টিবডি ওই জীবাণুকে ধ্বংস করে তার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। কোনো রোগী সুস্থ হলে তার শরীরের প্লাজমাকে বলা হয় কনভালসেন্ট প্লাজমা। আর এই প্লাজমার ভিতর ওই রোগের এন্টিবডি থাকে। এই প্লাজমা অন্য আক্রান্ত রোগীর দেহে প্রবেশ করালে তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে প্লাজমা থেরাপি।
⭕প্লাজমা দানের শর্ত সমূহ (Condition of plasma donation) প্লাজমা ডোনেট
একজন করোনা জয়ী ব্যক্তিকে প্লাজমা দানের জন্য যেসকল শর্ত মেনে চলতে হবে:
১. আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হবার পর ২৮ দিন অতিবাহিত হতে হবে।
২. রক্তে এন্টিবডি টাইটার ১:১৬০ হতে হবে।
৩. গর্ভবতী মহিলা প্লাজমা দানের জন্য উপযোগী নন।
৪. ব্যক্তির উপসর্গ মুক্ত হবার পর ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে দুটি RT PCR টেস্টের ২য় টির রেজাল্ট নেগেটিভ আসার পর ১৪ দিন অতিবাহিত হতে হবে।
⭕প্লাজমা দান কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর?(Is plasma therapy harmful for health?)
প্লাজমা থেরাপি আবিষ্কারের পর মূল সমস্যা হচ্ছে জনসচেতনতার অভাব। এ ব্যাপারে হেমাটোলজির অধ্যাপক এম এ খান বলেছেন “যারা প্লাজমা দেবে, তাদের ভয়ের কারণ নেই। বরং তার দেয়া প্লাজমা হয়ত অন্য একজন মানুষের জীবন বাঁচাবে। এটা একেবারে রক্ত দেয়ার মত ব্যাপার।” অর্থাৎ প্লাজমা দানে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না।
উল্লেখ্য যে, একজন ব্যক্তির দান করা ৬০০ মিলি প্লাজমা থেকে দুই থেকে তিন জন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।
প্লাজমা দানের ধারাবাহিকতার সূত্রপাত ঘটায় ডা. জোয়ারদার রাকিন। শুধু ডাক্তারই নয়, অন্য পেশার মানুষ ও এগিয়ে আসে মানবতার এই টানে। করোনাজয়ী ডা.দিলদার হোসেন তার প্লাজমা দানের অভিজ্ঞতা সরূপ বলেন ” এটা রক্ত দানের চেয়েও সহজ। ৩০-৩৫ মিনিট সময় লেগেছে আমার। যারা করোনায় সুস্থ হয়েছেন তারা যদি প্লাজমা দানে এগিয়ে আসেন তাহলে
অনেকে জীবন বাঁচবে। “
প্লাজমা থেরাপি বাংলাদেশ
প্লাজমা দানকে উৎসাহিত করার জন্য সর্বস্তরের জনগনের প্রতি আহবান জানিয়েছে ডা.এম এ খান। ইতিমধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্লাজমা ব্যাংক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। করো না জয়ীরা এখানে এসে প্লাজমা দিতে পারবেন।
যারা ডায়াবেটিকস অ্যাজমা হৃদরোগ সহ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছেন তাদের জন্য করোনা ভয়ের কারণ হতে পারে ।এই জন্য সর্বদা সতর্কতার কোন বিকল্প নাই।মূলত যে সমস্ত রোগীদের অবস্থা সংকটাপন্ন তাদের জন্য প্লাজমা থেরাপি খুবই উপযোগী পদ্ধতি হতে পারে।
WHO প্লাজমা থেরাপিকে আপাতত পরীক্ষা মূলক প্রয়োগের গাইডলাইন দিয়েছেন। যাতে এই থেরাপিকে ” ইনভেস্টিগেশনাল থেরাপিউটিক্স ” বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রটোকল ও জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রটোকল এর বাইরে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে এই থেরাপি দেয়া হচ্ছে। তবে আশার আলো এই যে, এতে করে সফলতা মিলছে। কাজেই প্লাজমা দানের ব্যাপারে সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো ও সহায়তা করছে।
” Be a hero, be a plasma donor ” এই ব্রতকে সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই এই উদ্যোগ সফল হবে।
plasma donation এর মাধ্যমে plasma therapy করে একজন করোনা রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে
লিখেছেন – ( নওশিন মারজিয়া, মেডিকেল শিক্ষার্থী)
[…] […]
[…] […]